বানিয়াচং উপজেলা সদরের মেধাবিকাশ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভানু চন্দ্র চন্দের বিরুদ্ধে ছাত্রীর সাথে অসদাচরণ, অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটার পদে লোক নিয়োগে গাফিলতি ও বিদ্যালয়ের আর্থিক অনিয়মসহ নানা অভিযোগ এনে মহাপরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বানিয়াচং উপজেলা সদর কামালখানী গ্রামের বাসিন্দা অভিভাবক ইয়াছিন মিয়া।
গত ২৩ মে এই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মেধাবিকাশ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভানু চন্দ্র চন্দ ৮ম শ্রেণিতে পড়ুয়া তার মেয়েকে অনুগত শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়তে চাপ প্রয়োগ করেন। এক পর্যায়ে প্রাইভেট না পড়ার কারণে ওই প্রধান শিক্ষক ইয়াছিন মিয়ার মেয়েকে নানাভাবে টর্চার করাসহ বকাঝকা করেন। তাছাড়া প্রধান শিক্ষক ভানুর বিরুদ্ধে বিগত ৭ বছর বিদ্যালয়ে অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার পদে কাউকে পদায়ন না করে তিনি নিজেই এই পদে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ফলে বিদ্যালয়ের অনেক হিসাব-নিকাশ তিনি ঠিক মতো না দিয়ে মোটা অংকের টাকা আত্নসাত করছেন।
অভিযোগে আরো জানা যায়, প্রধান শিক্ষক হয়ে তিনি একাধারে এই পদে কাজ করে যাচ্ছেন। ইচ্ছে করে তিনি অফিস সহকারি পদে লোক নিয়োগের কোন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ তো দুরের কথা ভারপ্রাপ্ত কাউকে দিয়ে কাজ করাতে অনিহা দেখাচ্ছেন। তাছাড়া বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটিতে তার পছন্দের লোক দিয়ে পরিচালনা করে আসছেন।
প্রধান শিক্ষক কি কারণে অফিস সহকারি কাম-কম্পিউটার পদে লোক নিয়োগ দিচ্ছেন না এবং বিদ্যালয়ের সকল আর্থিক অনিয়ম ও অসদাচরণের বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মহাপরিচালক বরাবর আবেদন জানিয়েছেন অভিভাবক ইয়াছিন মিয়া। অভিযোগের অনুলিপি হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক, বানিয়াচং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বরাবরে প্রেরণ করা হয়েছে।
বানিয়াচং মেধাবিকাশ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভানু চন্দ্র চন্দের সাথে কথা হলে তিনি জানান, কে বা কারা এই অভিযোগ দিয়েছে সেটা আমি জানি না। আর অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার পদে নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি একান্ত ম্যানেজিং কমিটির।
এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান খানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, অফিস সহকারি পদে লোক নিয়োগ দেয়া হচ্ছেনা সেটা আমাদের টেকনিক্যালি বিষয়। প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য এমনটা করা হচ্ছে। তারপরও অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত হোক। তদন্তে যদি সে দোষী প্রমাণিত হয় তাহলে সেটা ভিন্ন কথা।
প্রসঙ্গত, বানিয়াচং মেধাবিকাশ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভানু চন্দ্র চন্দ’র বিরুদ্ধে বিগত দিনেও অনিয়ম-দুর্নীতি, ভুয়া ভাউচারের বানিয়ে বিভিন্নভাবে লাখ লাখ টাকা আত্নসাত-লুটপাট করে নিজের পকেট ভারি, তার দুর্নীতির অনুসন্ধান করায় ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান মিয়াকে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি থেকে বাদ দেয়াসহ অসংখ্য অভিযোগ এনে গত ৮ জানুয়ারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ওই বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর অভিভাবক আলতাবুর রহমান চৌধুরী।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply