করোনা মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত ৩৫ লাখ নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোতে গত রবিবার (২ মে) থেকে সরাসরি নগদ অর্থ প্রেরণ শুরু করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে জীবন রক্ষার্থে দেশের সকল জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হচ্ছে।
এর ফলে নিম্নআয়ের শ্রমজীবি এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক কাজে নিয়োজিত বহু মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। করোনা ভাইরাসজনিত কারণে কর্মহীনতা ও আয়ের সুযোগ হ্রাসের কবল থেকে দেশের অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দিতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। গতবছর ২০২০ সালে করোনা মহামারীর কারণে যে সকল নিম্নআয়ের পরিবার আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এবং কর্মহীন হয়ে পড়েছিল তাদেরকে সহায়তার জন্য ‘নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান’ কর্মসূচি চালু করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বানিয়াচং উপজেলার ৪নং দক্ষিণ-পশ্চিম ইউনিয়নের কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের তালিকা করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
তালিকা অনুযায়ী তাদের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ২৫০০ টাকা পান তালিকায় থাকা ব্যক্তিরা। কিন্তু ওই ইউনিয়নের কয়েকটি ওয়ার্ডের কর্মহীনদের প্রণোদনার টাকা বিকাশের মাধ্যমে আত্নসাত করার অভিযোগ উঠেছে বানিয়াচং গ্যানিংগঞ্জ বাজার জান্নাত ভেরাইটিজ স্টোরের মালিক ও উপজেলা যুবলীগের সহ-অর্থবিষয়ক সম্পাদক আজিজুর রহমান খেলু’র বিরুদ্ধে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও গ্রাহকের চাপে সেই আত্নসাতকৃত টাকা ফেরত দেন তিনি।
জানা যায়,গত ১১ মে বিকাল ৫টায় লিটন দেব,স্বপন দেব,নুরুল মিয়া ও কেনু মিয়ার মোবাইল নাম্বারে প্রণোদনার টাকার ম্যাসেজ আসে। পরবর্তীতে টাকা উত্তোলন করতে তারা এই ম্যাসেজ নিয়ে স্থানীয় জান্নাত ভেরাটিজ স্টোরের মালিক খেলু মিয়ার বিকাশের দোকানে যান। সেখানে টাকা উঠাতে গেলে ভূয়া ম্যাসেজ বলে নানা টালবাহানা করে তাদেরকে তাড়িয়ে দেয় সে। চতুর খেলু এরই ফাঁকে প্রণোদনার টাকা তার মোবাইলের বিকাশ নাম্বারে নিয়ে উত্তোলন করে ফেলে সে। পরবর্তীতে ভুক্তভোগীরা বিকাশের হেড অফিসের সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারেন তাদের এই টাকা খেলু মিয়ার বিকাশের এজেন্ট (০১৭৫১-৫৫৪৫৪৫) নাম্বারে উঠানো হয়েছে।
১২দিন পরে সেই আত্নসাতকৃত টাকা ফেরত দিলেন তিনি। এ বিষয়টি বানিয়াচং ৪নং দক্ষিণ-পশ্চিম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেখাছ মিয়া অবহিত হয়ে বাজার ব্যবসায়ী আঙ্গুর মিয়ার হস্তক্ষেপে সেই আত্নসাতকৃত ১১ হাজার প্রণোদনার টাকা ফেরত পায় ভুক্তভোগীরা। এই বিষয়ে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা আজিজুর রহমান খেলু জানান,আমার বিকাশ নাম্বারে টাকা এসেছে ঠিক ই কিন্তু কোনো ম্যাসেজ আসেনি। পরবর্তীতে পিন নাম্বার ভুল থাকায় এমনটা হয়েছে।
তবে সেই টাকা আমি তাদেরকে ফেরত দিয়ে দিছি। বিস্তারিত জানতে কথা হয় উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও বানিয়াচং ৪নং দক্ষিণ-পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেখাছ মিয়ার সাথে। তিনি দৈনিক আমার হবিগঞ্জকে জানান,বিষয়টি সত্য। প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনার টাকা আত্নসাত করা ঠিক হয়নি।
পরবর্তীতে যাতে কেউ এভাবে আত্নসাত করতে না পারে সেই জান্নাত ভেরাটিজ স্টোরের মালিক আজিজুর রহমান খেলুর র আইনের মাধ্যমে বিচার হওয়া উচিত বলে মনে করি। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে তুমূল মুখরোচক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply