ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এখন থেকে সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ডিজিটাল মাধ্যমের ওপর নজরদারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ডিজিটাল মাধ্যমের ‘অপব্যবহার’ ঠেকাতে এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের দুজন মন্ত্রী।
সামাজিক ও ডিজিটাল মাধ্যম নিয়ন্ত্রণে বৃহস্পতিবার ভারতের কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ এবং তথ্য ও সম্প্রচার বিষয়ক মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর একগুচ্ছ নির্দেশিকা ও নিয়মনীতির ঘোষণা করেন।
নীতিমালা অনুযায়ী সরকার চাইলে যে কোনো তথ্য সংশ্লিষ্ট সামাজিক মাধ্যম জানাতে বাধ্য থাকবে।
তারা বলেন, স্বাধীনতার সাথে দায়িত্ববোধ জরুরি। সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতায় ‘আঘাত’ হানলে কঠোর শাস্তি হবে। তিন মাস পর এ সংক্রান্ত বিধিনিষেধ প্রণয়ন করবে সরকার। মাঝখানের সময়টাতে এ নিয়ে আলোচনা হবে।
বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবি শঙ্কর প্রসাদ এ সংক্রান্ত নিয়মাবলী (কোড অব এথিক্স) তুলে ধরেন। এতে তথ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর জন্য কিছু নিয়মের কথা বলা হয়েছে। এসব নিয়ম মেনে তবেই ব্যবসা করতে হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর হাতে থাকবে নজরদারির বিভিন্ন দায়িত্ব।
নীতিমালা অনুযায়ী সরকার চাইলে কোনো বার্তা বা টুইট কে করেছিলেন বা কোথা থেকে তার উৎপত্তি, সংশ্লিষ্ট সামাজিক মাধ্যম তা জানাতে বাধ্য থাকবে। ভারতের বাইরে থেকে আসা কোনো বার্তা ভারতে কে প্রথম ছড়ানো শুরু করেছে তাও জানাতে হবে। দেখাতে হবে কারও প্রোফাইলে বেআইনি তথ্য থাকলে তা প্রকাশের কারণও।
রবি শঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘ভারতে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে ডিজিটাল মাধ্যমের পথে কোনো বাধা দেওয়া হবে না। তাদের কাজ প্রশংসনীয়। সরকার সমালোচনাকেও স্বাগত জানায়। এর সাহায্যে মানুষ প্রশ্ন তুলতে পারেন। তার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে তাদেরকে অবশ্যই দেশের বিদ্যমান আইন মেনে চলতে হবে।’
তিনি আরো দাবি করেন, সামাজিক যোগাযোগ ও ডিজিটাল মাধ্যমগুলোর সাহায্যে দেশের সীমানার বাইরে থেকেও মানুষ সন্ত্রাসবাদ ও সহিংসতা ছড়ানোর চেষ্টা করছে। এমন অভিযোগও আছে সরকারের কাছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছাড়াও ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ও ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমের ওপর কী কী বিধিনিষেধ প্রয়োগ করা হবে তার ঘোষণা দেন মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। প্রথমত; নিজেদের মাধ্যমে কোন বিষয় প্রকাশ করতে হলে তার সব তথ্যও প্রকাশ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, অভিযোগ এলে তার নিষ্পত্তি করার পদ্ধতি থাকতে হবে।
এছাড়া ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ও ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমকে এ সংক্রান্ত একটি কমিটি তৈরি করতে হবে। যারা তাদের মাধ্যমে প্রকাশিত বিষয়বস্তুর ওপর নজরদারির কাজটি করবে। নেতৃত্বে থাকবেন কোনো উচ্চ আদালত ও শীর্ষ আদালতের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। বিষয়বস্তু নিয়ে অভিযোগ জমা পড়লে তার জন্য আদালতে শুনানি হবে।
যে কেউ কমিটির কাছে মামলা করতে পারবে। অভিযোগ আসলে সেই সংস্থাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বলা যেতে পারে বা তিরস্কার করা যেতে পারে। আইন অনুযায়ী এ নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হবে কমিটিকে।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply