1. sm.khakon0@gmail.com : udaytv :
শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৫ পূর্বাহ্ন

হত্যা ষড়যন্ত্রের রেকর্ড উদ্ধার, পরকিয়া প্রেমিক প্রেমিকা গ্রেফতার

Reporter Name
  • বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
  • ৪০৯ বার পড়া হয়েছে

বীরেন্দ্র কিশোর সরকার, বরগুনা ॥ বরগুনায় পরকিয়া প্রেমিকের মোবাইল থেকে স্বামীকে হত্যার ষড়যন্ত্রের রেকর্ড উদ্ধার হওয়ায় পরকিয়া প্রেমিক প্রেমিকাকে বৃহস্পতিবার (১১-২-২১) ভোররাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার ঘটনা স্বীকার করায় প্রেমিক রাজু আহমেদ (২০) ও প্রেমিকা ফাতেমা মিতুকে (২৪) আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া মিতু বরগুনা পৌরসভার থানাপাড়া এলাকার মাহতাব হোসেনের মেয়ে এবং রাজু সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের গোলবুনিয়া এলাকার বারেক মিয়ার ছেলে।

জানাগেছে, গত বছরের ২৩ মে রাতে বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের গয়েজ উদ্দিনের ছেলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নাসির উদ্দিন মারা যান। তার স্ত্রী মিতুর কাছে নাসিরের হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই তার মরদেহ দাফন স¤পন্ন করেন স্বজনরা। ঘটনাচক্রে নয় মাস পর মিতুর পরকিয়া প্রেমিক রাজুর হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোনে নাসিরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার কথোপকথনের রেকর্ডিং পায় নাসিরের স্বজনরা।

এ প্রেক্ষিতে থানায় অভিযোগ করেন নাসিরের বড় ভাই জলিল হাওলাদার। এ অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহ¯পতিবার ভোররাতে অভিযান চালিয়ে রাজু ও মিতুকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ বিষয়ে নাসিরের বড় ভাই ও মামলার বাদি জলিল হাওলাদার বলেন, ‘মিতুর কাছ থেকে আমার ভাইয়ের হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুর খবর পাই আমরা।

তখন আমাদের কোন কিছু সন্দেহ হয়নি। স্বাভাবিক নিয়মেই আমরা নাসিরকে দাফন করি। এঘটনার নয় মাসেরও বেশি সময় পর মিতু ও তার পরকীয়া প্রেমিক রাজুর মোবাইল ফোনসহ কথোপকথনের বেশ কয়েকটি রেকর্ড পাই আমরা। সে রেকর্ডে নাসিরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের কথোপকথন রয়েছে। তখন আমরা নাসিরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হই। এরপর পুলিশে অভিযোগ করলে পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাসির-মিতু দ¤পতি দুই সন্তানের জনক জননী। তাদের আট বছর বয়সী নুসরাত জাহান নামে এক মেয়ে ও পাঁচ বছর বয়সী নাঈম নামে ছেলে রয়েছে।
ফাতেমা মিতু তার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার কথা স্বীকার করে জানিয়েছেন, তাদের পরকীয়া স¤পর্ককে দীর্ঘস্থায়ী রূপ দিতে দুইজনে মিলে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছেন।

মিতু আরও জানান, ২৩ মে বিকালে ঘুমের ওষুধ কিনে রাজু তাকে দিয়ে আসেন। সন্ধ্যার পরে নাসির মজা করে কাঁঠাল খায়। ঘুমের আগে কৌশলে নাসিরকে অতিরিক্ত পরিমান ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়। রাত ১১ টার পরে রাজুকে মোবাইলে জানানো হয়, নাসির ঘুমিয়ে পড়েছে তুমি চলে আসো। রাত সাড়ে ১১ টার দিকে মিতু ও রাজু মিলে নাসিরকে কম্বল চাপা দিয়ে হত্যা করে। মিতু স্বীকার করেছে, তার ইচ্ছে ছিলো রাজুকে বিয়ে করে নতুন সংসার শুরু করবে।

রাজু জানিয়েছেন, স¤পর্কে দাদী হলেও মিতুকে সে ভাবী বলে ডাকতো। চাকরীর জন্য নাসির স্কুলে গেলেই তারা দাদী-নাতি অনৈতিক স¤পর্কে মিলিতো হতো। নাসির তাদের স¤পর্কের কথা জেনে ফেলায় পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়। ঈদের আগের রাতকে হত্যাকান্ডের জন্য বেছে নেবার প্রসংঙ্গে বলেন, তাদের ধারনা ছিলো ঈদের দিন সবিাই ব্যস্ত থাকবে। কেউ পরিকল্পিত হত্যার বিষয়টি বুঝতে পারবেনা। তবে হারিয়ে যাওয়া মোবাইলটি তাদের জন্য কাল হয়েছে। রাজু আরও জানায়, সপ্তাহ খানেক আগে তার মোবাইল ফোনটি হারিয়ে ফেলে।

বরগুনা থানার ওসি তারিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, রাজুর হারিয়ে ফেলা মোবাইল ফোনটি ঢলুয়া ইউনিয়নের পোটকখালী বাজারের দোকানদার আরেক রাজু পেয়েছে। ওই মোবাইল ফোনের কল
রেকর্ডে হত্যার পরিকল্পনার কথা জানা যায়। তাদের কল রেকর্ডসহ মোবাইল ফোনটি ওসির হাতে চলে আসলে বৃহস্পতিবার ভোর রাতেই মিতু ও রাজুকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি আরও জানিয়েছেন, নাসিরের বড় ভাই আবদুল জলিল হাওলাদার বাদী হয়ে মিতু ও রাজুকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেছে।

বরগুনার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর মল্লিক বলেন, মিতু ও রাজু দুজনই তাদের কাছে নাসিরকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
Uday tv @ ২০২০,সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত।
error: Content is protected !!

Designed by: Sylhet Host BD