বীরেন্দ্র কিশোর সরকার, বরগুনা ॥ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও সড়ক ও জনপথ এ দুই দফতরের রশি টানাটানিতে বরগুনার আমতলী ও তালতলী সড়কের আড়পাঙ্গাশিয়া নদীর বেইলি ব্রিজের সংস্কার কাজ বন্ধ রয়েছে।
দেবে যাওয়া স্টিলের পাটাতনের উপর কাঠের পাটাতন দিয়ে স্থানীয়রা ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে। যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
সরেজমিনে দেখাগেছে, ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্রীজ দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দুই উপজেলার দুই লক্ষাধিক মানুষ ও ঢাকাগামী পরিবহনসহ যানবাহন চলাচল করছে। গত এক মাস ধরে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশঙ্কা করেছেন এলাকাবাসী। দ্রুত ব্রিজ সংস্কারের দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসী।
জানাগেছে, আমতলী থেকে তালতলী উপজেলায় সড়ক পথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম আমতলী-তালতলী সড়ক। ৪০ কিলোমিটার এই সড়কটির মধ্যে আড়পাঙ্গাশিয়া নদীর উপর ১৯৮৫ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর একটি বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করে।
দুই উপজেলার সেতুবন্ধন এই ব্রিজটি দিয়ে প্রতিদিন ঢাকা ও তালতলীগামী পরিবহন বাস, তালতলী আইসোটেক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাভার ভ্যান, ট্রাক, প্রাইভেট কার, মাহেন্দ্র, ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা ও মোটরসাইকেলসহ সহস্রাধিক যানবাহন পারাপার হয়। এতে পুরাতন ব্রিজটি নড়বড়ে হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও পাটাতন আলগা হয়ে সরে গেছে। এর উপর কোন ছোট যানবাহন উঠলেও ঠকঠক করে নড়ে।
গত পাঁচ বছর ধরে এই ব্রিজটি এমন বেহাল দশায় পড়ে আছে। কিন্তু স ও জ বা এলজিইডির ঠেলাঠেলিতে ব্রিজের সংস্কার কাজ হচ্ছে না।
এলজিইডির দাবী আমতলী-তালতলী সড়ক ও ব্রিজ সওজ এর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এর উত্তরে সওজ বলছে ওই সড়ক ও ব্রিজ কাগজে কলমে এখনো তারা পায়নি। ফলে ব্রিজের সংস্কার কাজ করা হচ্ছে না।
এদিকে গত ৪ জানুয়ারি ব্রিজের পাটাতন ভেঙ্গে যাওয়ায় ২১ দিন ধরে আমতলী-তালতলীর সাথে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। স্থানীয়রা ওই ব্রিজের দেবে যাওয়াস্থানে কাঠের পাটাতন দিয়ে সংস্কার করায় স্বল্প পরিসরে ছোট যান চলাচল করছে। এতে জন দুর্ভোগে পরেছে দুই উপজেলার দুই লক্ষাধীক মানুষ।
বন্ধ হয়ে গেছে তালতলী থেকে ঢাকাগামী পরিবহন,আইসোটেক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাঁচামাল সরবরাহ কাভার ভ্যানসহ সকল ভারী যানবাহন। রবিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, ব্রিজের মধ্যখানের পাটাতন দেবে এলোমেলোভাবে পড়ে আছে। স্থানীয়রা দেবে যাওয়া জায়গায় কাঠের পাটাতন দিয়ে মেরামত করে দিয়েছে। যা দিয়ে ছোটছোট যানবাহন চলাচল করছে।
আমতলী উপজেলা নিবার্হী অফিসার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আমি আমতলী এবং তালতলী দুই উপজেলার দায়িত্বে আছি। ওই ব্রীজের দুরাবস্থার চিত্র প্রতিদিনই আমি প্রত্যক্ষ করি। ওই ব্রীজ নির্মাণের জন্য আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
বরগুনা এলজিইডির নিবার্হী প্রকৌশলী মো. ফোরকান আহম্মেদ বলেন, ওই সড়কটি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে হস্তান্তর করা হয়েছে। ওই সড়কের সকল ব্রিজ তারা সংস্কার করবে। এখানে আমার কিছুই করার নেই।
বরগুনা সওজ এর নিবার্হী প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জমান বলেন, ওই ব্রিজের দুরাবস্থার খবর জানি কিন্তু আমার কিছুই করার নেই। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ ওই সড়কটি সওজকে হস্তান্তর করলে ব্রিজ সংস্কারের দায়িত্ব আমার উপরে বর্তায়। কিন্তু এলজিইডি সড়কটি এখনও সওজকে দেয়নি।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply