এস এম খোকন ॥ নাগুড়া ধান গবেষণা কেন্দ্রে হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবিতে হবিগঞ্জ-২ আসনের বিভিন্ন শ্রেণীপেশার লোকজন শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেছেন। ০১ অক্টোবর সকালে নাগুড়া ধান গবেষনা কেন্দ্রের সামনের সড়কে ব্যানার ফেসটুন নিয়ে লোকজন অংশনেয়।
এসময় মানববন্ধনে আগত লোকজন, হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হওয়ায় শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, প্রয়াত জাতীয় নেতা সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমপি এবং এডভোকেট আব্দুল মজিদ খান এমপিসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে হবিগঞ্জ জেলাবাসীর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা, অভিনন্দন এবং তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এসময় তারা নাগুড়া ধান গবেষণা কেন্দ্রে “হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়” স্থাপনের কিছু যৌক্তিক দাবি উপস্থাপন করেন, ১. নাগুড়া কৃষি ফার্মকে কেন্দ্র করেই, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের চিন্তা ভাবনা করেন বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট আব্দুল মজিদ খান এবং ২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবী জানানো হয়েছিল। সেই দাবীর পেক্ষিতেই হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয় মহান জাতীয় সংসদে।
২. নাগুড়া কৃষিফার্ম এলাকায় “হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়” স্থাপন করা হউক এটা হবিগঞ্জ জেলাবাসীর দাবী এবং এখানে প্রায় ১০০ একরের উপরে সরকারি খাস জমি ও হাজার হাজার একর কৃষি-অকৃষি জমি রয়েছে এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামোও বিদ্যমান। ইচ্ছে করলে এখনই শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা সম্ভব।
৩. একটি তৈরি জায়গা থাকতে নতুন করে আরেকটি জায়গা তৈরি করে সরকারের শতশত কোটি টাকা অপচয় করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
৪. নাগুড়া ফার্ম এলাকা ৯টি উপজেলার প্রাণ কেন্দ্র, যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত ভাল, যানজট ও কোলাহলমুক্ত, মনোরম পরিবেশ হওয়ার কারণে জায়গাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য উপযুক্ত স্থান। তাছাড়া হবিগঞ্জ শহরের অতি সন্নিকটে। এর চেয়ে উপযুক্ত জায়গা হবিগঞ্জ জেলায় আর কোথাও নেই। পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ও হবিগঞ্জ জেলাবাসীর দাবী নাগুড়া ফার্ম এলাকায়ই “হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়” স্থাপন করা হউক।
৫. অত্র এলাকায় জমির দাম খুবই কম। বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য জমির প্রয়োজন পড়লেও শহরের তুলনায় প্রায় ২০ গুণ কম খরচে জমি ক্রয় করা সম্ভব।
৬. এখানে প্রাথমিক গবেষণা চালানোর মতো যাবতীয় অবকাঠামো ও ব্যবস্থা বিদ্যমান আছে।
৭. যানজট কোলাহলমুক্ত পরিবেশের জন্য বাংলাদেশের প্রতিটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শহরের বাহিরেই স্থাপন করা হয়েছে।
৮. উপমহাদেশের প্রথম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়টিও ১৯৬১ সালে শহর থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে স্থাপন করা হয়েছিল।
মানববন্ধনে উপস্থিত প্রকৌশলী ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ বাবু অশোক কুমার দাশ পিংকু দাশকে প্রশ্ন করা হয়েছিল হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কোথায় হওয়া উচিত? জবাবে তিনি বলেন, “অবশ্যই শহর থেকে কিছুটা দূরে যানজট ও কোলাহলমুক্ত স্থানে হওয়া উচিত।
হবিগঞ্জ শহর যেভাবে চতুর্দিকে সম্প্রসারিত হচ্ছে সেটি বিবেচনায় নিলে হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একমাত্র উপযুক্ত জায়গা হচ্ছে নাগুড়া কৃষি গবেষণাগার কেন্দ্র। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণার জন্য যে রকম অনুকূল পরিবেশ দরকার নাগুড়া ফার্মে সেরকম পরিবেশ বর্তমানে বিরাজমান।
তাছাড়া সেখানে খাস জমি, অবকাঠামো ও গবেষণাগার এবং উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা বিদ্যমান।
আমি মনে করি। সার্বিক দিক বিবেচনায় নাগুড়াতেই হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন হওয়া উচিত। কারণ এখানে প্রচুর খাস জমি পড়ে আছে এবং সরকারের বাজেট কম লাগবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক উন্নত এবং জেলার প্রতিটি উপজেলার সাথে সংযোগ স্থাপনের জন্য চমৎকার একটি জায়গা।
নাগুড়াতে যেহেতু তৈরি জায়গা রয়েছে সেহেতু নতুন করে জায়গা নির্বাচন করে ক্রয় করারও কোনো যৌক্তিকতা নেই বলেই আমি মনে করি।
তাই, প্রিয় হবিগঞ্জবাসীর প্রতি আকুল আবেদন আসুন, আমরা সবাই একসাথে মিলত হয়ে নাগুড়া ফার্মেই স্বপ্নের “হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়” প্রতিষ্ঠা করে হবিগঞ্জ জেলাকে বাংলাদেশের অন্যতম আলোকিত পরিবেশবান্ধব জেলায় রূপান্তর করি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মাননীয় রাষ্ট্রপতির নিকট আকুল আবেদন, আমাদের প্রাণের দাবি হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপনের বিষয়টি পুনঃবিবেচনা করে ২০১৪ সালের জনসভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে উত্থাপিত এবং প্রস্তাবিত নাগুড়া কৃষি ফার্মেই হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করে হবিগঞ্জবাসীর স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করুন।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply