1. sm.khakon0@gmail.com : udaytv :
রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৩৯ পূর্বাহ্ন

বরগুনার এম. বালিয়াতলী ইউনিয়নের নির্বাচনী মাঠ উত্তপ্ত ॥ ঝুঁকির মুখে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

বীরেন্দ্র কিশোর সরকার, বরগুনা
  • রবিবার, ৭ নভেম্বর, ২০২১
  • ২৮১ বার পড়া হয়েছে

বরগুনা সদর উপজেলার এম. বালিয়াতলী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে একাধিকবার পাল্টাপাল্টি হামলা-মামলার কারণে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে সাধারণ ভোটারগণ। ইতোমধ্যেই উভয় পক্ষের প্রায় অর্ধশতাধিক কর্মী সমর্থক যখম হয়েছে।

উভয় পক্ষের দায়েরকৃত মামলায় আসামি করা হয়েছে সহস্রাধিক ব্যক্তিকে। একে অপরকে দোষারোপ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী এ্যাডভোকেট নাজমুল ইসলাম নাসির ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এম.এ. বারী বাদল।

শুক্রবার (৫ নভেম্বর) বেলা ১১টায় আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী এ্যাডভোকেট নাজমুল ইসলাম নাসির বরগুনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তার প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র প্রার্থী এম.এ. বারী বাদলের বিরুদ্ধে নৌকা মার্কার নেতাকর্মীদের উপর সশস্ত্র হামলার অভিযোগ এনেছেন। তিনি পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ এ অভিযোগ করে বাবুগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত কর্মকর্তার অপসারণ দাবি করেন।

ওই দিন (শুক্রবার) রাতে স্বতন্ত্র প্রার্থী এম.এ. বারী বাদল নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন ডেকে সাংবাদিকদের জানান, আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী এ্যাডভোকেট নাজমুল ইসলাম নাসির নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখার জন্য গোটা ইউনিয়নে অশান্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। তাঁর নেতৃত্বেই সহিংসতামূলক ঘটনা ঘটছে। ভোটাররা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আমি জীবনের নিরাপত্তাহীনতার কারণে বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না।

আমার ৫/৬শ কর্মীসমর্থকের বিরুদ্ধে হয়রানীমূলক মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেফতারের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা। সরকার দলীয় প্রার্থীর অনির্বাচন সুলভ আচরণে সুষ্ঠু স্বাভাবিক নির্বাচন প্রক্রিয়া চরমভাবে ব্যাহত হয়েছে।
এম.এ. বারী বাদল নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার জন্য নির্বাচন সংশ্লিষ্ট উর্ধতন ককর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

জানাগেছে, এম. বালিয়াতলী ইউনিয়নে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত দুপক্ষের হামলা পাল্টা হামলায় উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ১৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নৌকা মার্কার প্রার্থী অ্যাডভোকেট নাজমুল ইসলাম নাসিরের ভাই মো. সগির হোসেন বাদী হয়ে বরগুনা থানায় ৬৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৫শ থেকে ৬শ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

এ ঘটনায় শুক্রবার (৫ অক্টোবর) বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে বরগুনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন নৌকা প্রতীকের পার্থী অ্যাডভোকেট নাজমুল ইসলাম নাসির।
এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মনসাতলী নামকস্থানে আমার নির্বাচনী ক্যাম্পে স্বতন্ত্র প্রার্থী এম. এ. বারী বাদলের ইন্ধনে তার সমর্থকরা অতর্কিত হামলা চালায়। পরবর্তীতে আমি আমার কর্মীদের নিয়ে এম.এ. বারী বাদলের বাড়ির সামনে দিয়ে উঠান বৈঠকে যাওয়ার সময় আমাকে হত্যার উদ্দেশ্য করে এবং আমার সাথে থাকা কর্মীদের ওপর পুনঃরায় ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় বারী বাদলের কর্মী সমর্থকরা।

এ সময় আমাকে আমার কর্মীরা নিরাপদে রাখতে সরিয়ে নিয়ে যায়। তবে আমার সাথে থাকা ৪ কর্মী গুরুতর জখম হন। পরে রাত ১০টার দিকে বারী বাদলের বাড়ির সামনে দিয়ে ফেরার পথে পুনঃরায় হামলা চালায় তার কর্মী সমর্থকরা। এসব ঘটনায় আমার অন্তত অর্ধশতাধিক কর্মী সমর্থক আহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে গুরুতর জখম ৮ জনকে বরগুনা সদর হাসপাতাল এবং একজনকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। বাকীরা বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন।

নাজমুল ইসলাম নাসির আরও অভিযোগ করে বলেন, এম.এ. বারী বাদল বর্তমানে আওয়ামী লীগ দাবি করলেও তিনি আওয়ামী লীগ থেকে বহিস্কৃত এবং বিএনপি জামাতের মদদ পুষ্ট হয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছেন। তিনি এলাকায় সন্ত্রাসের রাজ্য কায়েম করার চেষ্টা করছেন। এমনকি ইউনিয়ন, উপজেলা এবং জেলা আওয়ামী লীগের কিছু নেতারাও নৌকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। তারা গোপনে এম.এ. বারী বাদলকে এসব কর্মকান্ডে সহযোগিতা করছেন। নাজমুল ইসলাম নাসির দায়িত্বরত পুলিশের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় সদর উপজেলার বাবুগঞ্জ পুলিশ ফাঁরির দায়িত্বরত ইনচার্জ মো. ফরিদ উদ্দীনের দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি জানান।

স্বতন্ত্র প্রার্থী এম.এ. বারী বাদল বলেন, সন্ধ্যার পরে আমার আনারস মার্কার কর্মীরা মিছিল নিয়ে লাকুরতলার দিকে যাওয়ার পথে মনসাতলী নামকস্থানে পৌঁছলে নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা অতর্কিত হামলা করে। পরে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট নাজমুল ইসলাম নাসিরের নেতৃত্বে আমার বাড়িতে হামলা করার চেষ্টা করলে আমার কর্মী সমর্থকরা তা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় আমার ১৫ থেকে ২০ জন কর্মী সমর্থক আহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে গুরুতর আহত ৪ জনকে বরগুনা জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

অন্যদিকে এ ঘটনার সময় আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম সরোয়ার শাহিনের ঘোড়া মার্কার প্রচারকালে একটি রিক্সা এবং মাইক ভাংচুর করা হয়েছে।
বরগুনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কে.এম. তারিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে তিনি জানান।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
Uday tv @ ২০২০,সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত।
error: Content is protected !!

Designed by: Sylhet Host BD