সুলতানুল আরিফিন কাজল,নাটোরঃ নাটোরের কানাইখালী মাঠ।নাটোর শহরের ইতিহাস-ঐতিহ্যের অংশ।নাটোরের ক্রীড়াঙ্গনের ইতিহাসের এক জীবন্ত জমিন।শুধু কানাইখালী মহল্লা নয় নাটোর জেলার ক্রীড়া ঐতিহ্যের ধারক-বাহক।অথচ এই কানাইখালী মাঠের বুকে উপর্যূপরি ছুরিকাঘত করে প্রতি নিয়ত ঝড়ানো হচ্ছে রক্ত।যার রং অনেকেই দেখতে পাচ্ছেনা।
তথ্য প্রমাণ অনুযায়ী কানাইখালী মাঠের প্রকৃত মালিক নাটোর টাউন ক্লাব।নাটোরের সমস্ত খেলা পরিচালনা,স্টেডিয়াম সপ্যাভিলিয়ন নির্মান সহ ৪টি শর্তে ১৯৭৯ সালের ২২ জুন মাঠটি তৎকালীন মহকূমা ক্রীড়া সংস্থার ওপর একরার নামার মাধ্যমে অর্পন করা হয়েছিল।শংকর গোবিন্দ চৌধুরী স্টেডিয়াম নির্মানের আগে বেশ যত্নেই ছিল মাঠটি।মাসব্যাপী প্রদর্শনী মেলা হলেও মেলা শেষে সযত্নে মাঠটিকে আবার ফিরিয়ে আনা হত আগের মত।কিন্ত শংকর গোবিন্দ চৌধুরী স্টেডিয়াম নির্মানের পর কানাইখালী মাঠ যেন সৎ সন্তানের পর্যায়ে চলে যায়।যদিও একরার নামার ৪ নং শর্ত অনুযায়ী খেলার জন্য পৃথক স্টেডিয়াম নির্মানে হলে কানাইখালী মাঠটি টাউন ক্লাবের কাছে হস্তান্তর করতে হবে।তাতো হয়নি বরং ক্রীড়া সংস্থার অবহেলায় কানাইখালী মাঠ ব্যবহার হচ্ছে যাচ্ছেতাই ভাবে।যে যার মত ব্যবহার করে ফেলে রেখে যাচ্ছে অমানবিক ভাবে।
সবশেষ মহামারি করোনার কারনে ১৫ এপ্রিল নিচাবাজার থেকে কাঁচা বাজার কানাইখালী মাঠে স্থানান্তর করা হয়।এক মাস ৬ দিন পর কাঁচা বাজার চলে গেছে তার পূর্বের স্থানে।কিন্তু রেখে গেছে এক বুক জ্বালা।মাঠের দিকে তাকালে মনে হবে কোন দুর্গত এলাকা।চারিদিকে ধ্বংস স্তুপ।তার মধ্যেই ঝুকি নিয়ে খেলার চেষ্টা করছে এলাকার কিছু কোমলমতি শিশু।দেশের সংকট কালে যে জমিনটি বুক পেতে আমাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে সহযোগিতা করলো তার প্রতি ক্রীড়া সংস্থা বা পৌর কর্তৃপক্ষের যনে কোন দায় নেই।
নাটোর টাউন ক্লাবের সর্বশেষ ক্যাপ্টেন ও প্রাক্তন ক্রীড়াবিদ খালিদ বিন জালাল বাচ্চু জানান,১৯৩৬ সালে নাটোরের ছোট তরফের রাজা বীরেন্দ্রনাথ ৩ একর ৭৯ শতক জমিটি খেলার জন্য নাটোর টাউন ক্লাবকে দান করেন।১৯৬২ সালে মাঠটি দখল করে আনসার কর্তৃপক্ষ।এর বিরুদ্ধে টাউন ক্লাব মামলা করলে জয়ী হয়ে ১৯৭০ সালে আদালতের মাধ্যমে মাটটি পূনরায় ফিরে পায় টাউন ক্লাব।ক্রীড়া সংস্থাকে মাঠটি দেয়া হলেও তারা এর হেফাজত করতে ব্যর্থ হয়েছে।যা দুঃখ জনক বলে জানান বাচ্চু।
এদিকে এলাকাবাসীর দাবি অবিলম্বে কানাইখালী মাঠ সংস্কার করে খেলার উপযোগী করা হোক।
Leave a Reply